চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় নূরুল হক মহাজন, জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল
স্টাফ রিপোর্টার ::
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সুনামগঞ্জের সালিশি ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল হক মহাজন। বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটায় নামাজে জানাজা শেষে তেঘরিয়া গাজির দরগাহ কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
আর আগে মরহুম নুরুল হকের নামাজে জানাজায় অংশ নিতে পশ্চিম তেঘরিয়া লক্ষণশ্রী ঈদগাহ ময়দানে জড়ো হন হাজারো মানুষ। তারা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষকে বিদায় জানাতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন। নানা বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় ঈদগাহ ময়দান। হাজারো জনতা অশ্রুসিক্ত নয়নে তাদের প্রিয় ‘মহাজন সাহেব’কে বিদায় জানান।
নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন সিলেট অঞ্চলের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন আল্লামা নূরুল হক খান।
এর আগে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট শেরেনূর আলীর সঞ্চালনায় দানবীর এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম নূরুল হক মহাজনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম, জামেয়া মাদানিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল বছির, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শেরগুল আহমেদ, মরহুম নূরুল হক মহাজনের ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জিয়াউল হক।
এসময় পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুম নূরুল হক মহাজনের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া কামনা করা হয়। স্মৃতিচারণকালে বক্তারা সমাজসেবক নূরুল হক মহাজনের মতো সবাইকে মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীণ ব্যক্তি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল হক মহাজন গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের সময় সিলেটের মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৪ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ৫ মেয়ে, নাতি-নাতনি, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
সুনামগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সালিশি ব্যক্তিত্ব নূরুল হক সকলের কাছে নূরুল মহাজন নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। সমাজসেবা এবং শিক্ষাবিস্তারে তিনি অবদান রেখেছেন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক রেজাউল হক ও দৈনিক সুনামকণ্ঠ’র সম্পাদকম-লীর সভাপতি জিয়াউল হক-এর পিতা নূরুল হক মহাজন একজন মহৎপ্রাণ মানুষ ছিলেন। দানবীর হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল সুনামগঞ্জ জেলাজুড়ে।
তিনি জীবদ্দশায় অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করতে ভূমিদান, ভবন নির্মাণ, আর্থিক সহায়তাসহ বিশেষ অবদান রেখেছেন। বিশেষ করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানাসহ ইসলামী অঙ্গনে তাঁর বিশেষ অবদান ছিল। তিনি নির্যাতিত মানুষের আশ্রয়স্থল ছিলেন। তাঁর কাছে হিন্দু-মুসলিম কোনো বিভেদ ছিল না। দান-দক্ষিণায় তাঁর হাত ছিল প্রসারিত।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ